বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৫:১১ অপরাহ্ন
একটা গান আছে- ‘মরি হায় হায় রে দু:খের আগুন জ্বলে/হাজার টাকার বাগান খাইল পাঁচ সিকার ছাগলে/ মরি হায় হায় রে”। তা তো বটেই। এত মূল্যবান বাগানে ছাগল বেটা মুখ লাগাবে কেন? ওর কমন সেন্স নেই!
কিন্তু কী আর করা। ঐ যে ‘ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি’। পেটের ক্ষুধা মেটাতেই এই চাঁদরুপী চোখ ঝলসানো বাগানের কিছু পাতা খেয়েছিল ছাগলটি। গত একটানা বৃষ্টির কারণে বেচারী ছাগল ঘর থেকে বের হতে পারেনি হয়ত। তাই ক্ষিধের চোটেই বোধ হয় উপজেলা চত্তরে লাগানো বাগানের ফুলগাছের পাতা খাওয়াটাই ছিল তার অপরাধ। এই অপরাধেই ছাগল বেচারীকে এই শাস্তি দিলেন এক উপজেলা নির্বাহী অফিসার। পুরো ২ হাজার টাকা আক্কেল সেলামী গুণতে হলো ওই ছাগলকে।
সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহী বিভাগের বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলায়। মালিকের অনুপস্থিতিতে উপজেলা চত্ত্বরে লাগানো ফুল গাছের পাতা খেয়ে ফেলায় বিচারিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে খোদ ছাগলকেই দোষী সাব্যস্ত করে তাকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সীমা শারমিন।
বাংলাদেশের প্রচলিত আইন মোতাবেক সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে বিশেষ কিছু আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আদালতের মাধ্যমে অপরাধীকে শাস্তি প্রদান করা যায়।
অন্যদিকে, তাৎক্ষণিকভাবে বিশেষ ক্ষমতায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে জেলা-জরিমানা করতে হলে অভিযুক্তকে অবশ্যই আনিত অভিযোগকে আইনী প্রক্রিয়ার কৌশল অবলম্বন করে তার দোষ স্বীকার করতে হয়।
এই ক্ষেত্রে দুই হাজার টাকা মূল্যের ফুল গাছের পাতা অভিযুক্ত ছাগলটি যে চিবিয়ে খেয়েছেন, তা কি তিনি (অভিযুক্ত ছাগল) UNO মহোদয় এর সামনে স্বীকার করেছেন? এ নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে!
যাই হোক, ছাগল সাহেব তো বেকার। তিনি মালিকের হোটেলেই পেট চালিয়ে নেন। তাই জরিমানার ঐ অর্থ প্রদান করতে ছাগল মালিককে অনুরোধ করেন। কিন্তু মালিক অপরাধী ছাগলের জরিমানার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে UNO আপা জরিমানা উসুল করতে ৫ হাজার টাকায় ছাগলটিকেই বিক্রি করে দিয়ে দেন!
পরে জানা গেল, UNO আপা নিজে জরিমানা দিয়ে সেই ছাগলটিকে মালিকের নিকট ফিরিয়েও দিয়েছেন।