শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪১ পূর্বাহ্ন
আব্দুল করিম সরকার : বড় আশা করে ঢাকা থেকে নিজ গ্রামে বেড়াতে এসেছিল রনি খাতুন। ইচ্ছে ছিল পরিবারের সবার সাথে ঈদের আনন্দ গুলো ভাগাভাগী করে আনন্দমূখর একটা ঈদ উদযাপন করবে সে। হয়ত হয়েছিলও তাই। এবার নিজ কর্মস্থলে ফেরার পালা। পীরগঞ্জে থেকে সে বাসের টিকিট কেটে ঢাকায় ফিরে যাবে কর্মে যোগদান করার জন্য। কিন্তু হায়রে কপাল! ঢাকায় ফেরার টিকিটের বদলে পরপারের শেষ টিকিট টাই কাটতে হলো রনি খাতুনের। রংপুরের পীরগঞ্জ ইউনিয়নের ডিপটি মন্ডলের ৩য় পুত্র লম্পট দুলাভাই শফিউল ইসলাম শফির ছুরির আঘাতে নিথর দেহ মাটিতে লুটিয়ে পড়ল সে। ঢাকার বদলে তাকে ফিরতে হলো মর্গের ভয়াল কালো অন্ধকারে। এমনি এক মর্মান্তিক খুনের ঘটনা ঘটেছে রংপুরের পীরগঞ্জে বাসস্ট্যান্ডে। আজ শুক্রবার সকালে পীরগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে শালিকাকে ধারালো ছুরি দিয়ে খুন করেছে লম্পট দুলাভাই। জানা গেছে, আরিজপুর গ্রামের আঃ ছাত্তারের মেয়ে রনি খাতুন ঢাকা পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। গত ১০ মাস আগে বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার নড়িয়া গ্রামের এক ছেলের সাথে বিয়ে হয়। পবিত্র ঈদ-উল আযহা উপলে সে নিজ বাড়ি আরিজপুরে বেড়াতে আসে। আজ নিজ কর্মস্থল ঢাকা ফেরার জন্য অটোভ্যান যোগে লালদিঘী হয়ে পীরগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে আসে। ওদিকে শফি গোপনসূত্রে খবর পেয়ে শালিকার সাথে দেখা করার জন্য সেও বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছায়। কাউন্টারে টিকিট কাটার সময় দুলাভাই শফির সাথে শালিকার সাাত করে। পুরোনো প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে শালিকার হাত ধরে টানাটানি শুরু করে। এতে শালিকা প্রতিবাদ করলে তুমুল বাক-বিতন্ডার একপর্যায়ে দুলাভাই শফিকুল ইসলাম শফি শালিকা রনি খাতুনের তলপেটে উপর্যপরি ছুরিকাঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে পীরগঞ্জ থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যূ হয়। লাশ মর্গে আছে। দুলাভাই শফিকুল ইসলাম শফি পলাতক। থানায় মামলা দেয়ার প্রস্তুতি চলছে। উল্লেখ্য, এক সন্তানের জনক শফিকুল ইসলাম শফি শালিকা রনি খাতুনকে বিয়ে করার জন্য তার বড় বোন সাবিনা বেগম কে ডিভোর্স দেয়। কিন্তু শালিকা রনি খাতুনের কোনো পাত্তা না পেয়ে পরবর্তীতে পীরগঞ্জের শানেরহাটে দ্বিতীয় বিয়ে করে। কিন্তু লম্পট শফির কার্যকলাপে অতিষ্ট হয়ে দ্বিতীয় বউও বাপের বাড়ি চলে যায়। সম্ভবত সে কারণেই সে শালিকা রনি খাতুন কে বিয়ে করার জন্য উঠে পড়ে লেগে যায়।