শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৫ অপরাহ্ন
আব্দুল করিম সরকার: মানুষের জন্ম দৈবের অধীনে। বড় বৈচিত্রময় উপাদান নিয়ে এই মানব সমাজ গঠিত। মানুষের মধ্যে কেউ লম্বা, কেউ খাটো, কেউ ফর্সা, কেউ বা কালো প্রভৃতি। আবার প্রকৃতিগতভাবে কিছু মানুষের হাত থাকে না অথবা পা থাকে না, থাকে না কথা বলার শক্তি। এদেরকেই আমরা সাধারনত প্রতিবন্ধি হিসেবে অ্যাখায়িত করি। এমনি এক প্রতিবন্ধির দেখা মিলে গেল রংপুরের পীরগঞ্জে কাবিলপুর ইউনিয়নের সরলিয়া গ্রামে। শারীরিক গঠনে ওর কোন ঘাটতি, তবে সব চলার শক্তি সে হারিয়ে ফেলেছ। ছেলেটির নাম মাহাবুব মিয়া, পিতা- খুশি মিয়া। পড়াশুনা পঞ্চম শ্রেণির বেশি করতে পারেনি। এরা ০২ ভাই ০১ বোন। বোনের বিবাহ হয়ে গেছে। ছোট ভাই মাহে আলম কাশ এইটে পড়ে। বাবার উদাসীনতার অভাবের সংসারে স্বচ্ছলতার স্বপ্ন নিয়ে ইটের কাজে নেমে পড়ে মাহবুব। কিন্তু হঠাৎ করেই কোমর যেন আর কাজের ভার সইতে পারেনা। স্বর্ণ-লতার মতই ব্যাথায় নূইয়ে পড়ল। ওই যে ব্যাথা শুরু; শেষ পর্যন্ত ওই ব্যাথাই তাকে পঙ্গুত্বের অভিশপ্ত জীবনটা উপহার দিল। বর্তমান মাহাবুব হাঁটতে পারেনা। জীবন-জীবিকার তাগিদে সে সংগ্রামে নেমে পড়েছে। অস্ত্র হচ্ছে তার চাচার মালিকানা ভ্যানটি। প্রতিদিন সে সে রাস্তার সাথে অন্যের বারান্দায় ভ্যানটি রেখে খোলা আকাশের নীচে ফেক্সিলোডের ব্যবসা করে। তা দিয়ে যা আসে তাতে কোনমতে তার চা খাওয়ার পয়সাটা যোগাড় হয় মাত্র, পেট চলেনা। মাহবুবের আশা তার যদি একটা হুইল চেয়ার থাকত, তাহলে সেই চেয়ারে বসে সে ঘুরে ঘুরে পয়সা রোজগাড় করত। কোন দানশীল ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান যদি এই প্রতিবন্ধী মহবুবের পাশে থেকে তার দিকে বন্ধুর মত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে একটা হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করে দিত, তাহলে তার জীবনটা হয়ত পাল্টে যেতে পারত- এমনি প্রত্যাশা তার।