শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:২৮ পূর্বাহ্ন
আলোর সংবাদ ডেক্স: ৩৮তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল। বিসিএস পরীক্ষায় রাজারহাট উপজেলা থেকে দুইজন উত্তীর্ণ হয়েছেন। ইচ্ছে থাকলে উপায় হয় তারই স্বাক্ষর রেখেছেন রাজারহাট উপজেলার দুই কৃতী সন্তান মাসুদ রানা বিসিএস (প্রাণিসম্পদ) এবং আদুরী তমা বিসিএস (কৃষি)।
বিভিন্ন ক্যাডারে দুই হাজার ২০৪ জনকে নিয়োগের জন্য মঙ্গলবার বিকালে ৩৮তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করেছে সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। মাসুদ রানা জীবনে প্রথমবারের মতো বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে প্রাণিসম্পদ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন।
মাসুদ রানা উপজেলার রাজারহাট সদর ইউপির কিসামত পুনকর (শান্তিনগর) এলাকার মো. বাছের আলী ও মা রুবি বেগমের বড় ছেলে। মাসুদ রানা স্কুলজীবন থেকেই পড়ালেখার সময় প্রতিটি ক্লাসে মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন।
পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছেন। উপজেলার স্বনামধন্য রাজারহাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০৯ সালে জিপিএ-৫ নিয়ে উত্তীর্ণ হন এবং রংপুর সরকারি কলেজ থেকে ২০১১ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। রংপুর কলেজের সব ছাত্রের মধ্যে অন্যতম সেরা ছাত্র হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছিলেন মাসুদ রানা।
পরে ভর্তি হন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। একাডেমিক পড়াশনার পাশাপাশি বিসিএসের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পূর্বেই ২০১৭ সালে ৩৮তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে অ্যাপেয়ার্ড দিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেন মাসুদ রানা। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাবস্থায় বিসিএস প্রিলি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হন এবং পরবর্তীতে লিখিত পরীক্ষা দেন।
কিন্তু পরিবারকে অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য ফল প্রকাশের আগেই চাকরিতে প্রবেশ করেন। তিনি বর্তমানে মেহেরপুরে একটি সংস্থায় প্রকল্প পরিচালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় পাস করার ফলাফল পেয়ে চাকরিরত অবস্থায় প্রস্তুতি নিয়ে ভাইভা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন।
গতকাল মাসুদ রানা তারপ্রথম বিসিএসের সফলতা নিয়ে। মাসুদ রানা সফল হয়েছেন কিন্তু এই দীর্ঘপথ কখনো মসৃণ ছিল না। স্কুলজীবন থেকেই অনেক আর্থিক সংকটের মধ্য দিয়ে পাড়ি দিতে হয়েছে তাকে।
তবে জীবনে যদি লক্ষ অটুট থাকে কোনো বাধাই তাকে দমিয়ে রাখতে পারে না, তারই প্রমাণ রেখেছেন অদম্য মাসুদ রানা। তিনি শিক্ষাজীবনের প্রতিটি স্তরে সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন, দিয়েছেন মেধাবীর পরিচয়। শুধু ভালো ছাত্র হিসেবেই নয়, সদা হাসিখুশি আর সুন্দর ব্যবহারের জন্যও সবার কাছে পরিচিত।
মাসুদ রানা বলেন, আমি সত্যিই খুব অভিভূত যে, আমার রাজারহাটের সবাই আমাকে এতটা ভালোবাসে যা আমি ফেসবুক, ফোনকল, মেসেজের মাধ্যমে জানতে পারলাম।
আমি আমার জীবনের এই সাফল্যের জন্য কৃতিত্ব দিতে চাই আমার মা-বাবাসহ সকল স্যারদের এবং বন্ধুদের। আমাকে রাজারহাটের অনেকেই সবসময় অনুপ্রেরণা দিয়েছেন।
তাদের মধ্যে আবু নূর মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান মামা, আবুল হোসেন প্রিন্সিপ্যাল নানু, এনামুল আংকেল, তৌহিদ আংকেল উল্লেখযোগ্য। মাসুদ রানা বলেন, ভবিষ্যতে আমি রাজারহাটের আর্থিক সংকটে থাকা ছাত্রছাত্রীদের জন্য কাজ করতে চাই।