শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২৬ পূর্বাহ্ন
বিনোদন ডেস্ক- মেয়ের আত্মহত্যার কারণে সিনেমা থেকে সরে দাঁড়িয়ে পুরোদস্তর ব্যবসায়ী হয়েছেন এক সময়ের জনপ্রিয় নায়ক শাহিন আলম। আগে থেকে অভিনয়ের পাশাপাশি টুকটাক গার্মেন্টসের ব্যবসা করতেন তিনি। সেটাকে পুঁজি করে পরবর্তীতে জীবিকা হিসেবে নিলেন তিনি।
রাজধানীর গাউছিয়ায় তাদের পৈতৃক দুটো শোরুম ছিল। অভিনয় ছাড়ার পর সেখানেই তিনি নিয়মিত নিজেকে ব্যবসার সাথে জড়ান। ওই মার্কেটে একটি শোরুম ভাড়ায় চলে। আরেকটি শোরুমে নিজে ব্যবসা করেন।
চলচ্চিত্র থেকে হুট করে সিদ্ধান্ত নেওয়া শাহিন আলম জানান, ‘মেয়ের মৃত্যুর জন্য সিনেমা থেকে সরে দাঁড়াই। যখন সিনেমা থেকে সরে দাঁড়াই তখন দুই তিনটি সিনেমার কাজ হাতে ছিল। সেগুলো শেষ করে একেবারে সিনেমা থেকে দূরে চলে যাই। অবশ্য কাজী হায়াতের অনুরোধে আরো দুটি ছবিতে কাজ করি।
শাহিন আলম শেষ ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান রকিবুল আলম পরিচালিত ‘দারোয়ানের ছেলে’ ছবির জন্য। এরপর কাজী হায়াতের দুটি ছবির কাজ করলেও আর তাকে নতুন কোনো চলচ্চিত্রে দেখা যায়নি।
তিনি বলেন, সিনেমা যখন পরিচালকদের হাত থেকে প্রযোজকের হাতে চলে গেল, তখন থেকেই সিনেমার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। ওই সময় প্রযোজকরা আমার কাছে ভালগার শট দেওয়ার অনুরোধ করে। আমি সেই শট দেইনি। তবে তারা কাটপিস শুট করে করেছে পর্দায় ক্লোজ শটগুলো ব্যবহার করে। আমি দেখে বলেছিলাম, তারা বলে এসব না করে উপায় নেই। তখন থেকেই সিনেমা থেকে মন উঠে যায়। সিনেমার প্রতি যে নেশা ছিল তা অশ্লীলতার কারণে আর থাকেনি।
সিনেমা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে নিজের বাবার শোরুমে বসতেন শাহিন আলম। বর্তমানে নিজের অসুস্থতার কারণে আর সেই শোরুমেও বসা হয় না তেমন একটা। এ বিষয়ে শাহিন আলম বলেন, চার বছর থেকে কিডনি রোগে ভুগছি। সাড়ে তিন বছর ধরে ডায়ালাইসিস করে চলছি। প্রতি সপ্তাহে তিন দিন সাভারের গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডায়ালাইসিসের জন্য যেতে হচ্ছে।’
নাসির খান পরিচালিত `স্বপ্নের নায়ক’ সিনেমার একটি দৃশ্যে প্রয়াত সালমান শাহ ও শাহিন আলম।
চলচ্চিত্রের মানুষেরা আপনার খোঁজ রাখে? এমন প্রশ্নে শাহিন আলম বলেন, সিনেমার লোকদের মধ্যে অমিত হাসান ও মিশা সওদাগর নিয়মিত রাখেন। সম্প্রতি শিল্পী সমিতি থেকে আমার সাথে দেখা করার জন্য কয়েকজন এসেছিল। সিনেমা ছাড়ার দুবছর অনেকে যোগাযোগ করেছেন। এখন আর কেউ করেন না বলেও অভিমানের তীর ছুড়ে দেন নিজের সহকর্মীদের উপর।
১৯৮৬ সালে নতুন মুখের কার্যক্রমে অংশ নিয়ে প্রবেশ করেন সিনেমায়। দেড় শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। ১৯৯১ সালে তার অভিনীত ‘মায়ের কান্না’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর একসঙ্গে ৭টি ছবিতে সাইন করেন। তখন থেকে তাকে আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। এরপর টানা কাজ করে গেছেন এই অভিনেতা।