বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:
শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড, শিা ছাড়া কোন জাতি উন্নতি লাভ করতে পারেনা, যে জাতি যত বেশী শিতি সে জাতি তত বেশী উন্নত। এসব প্রবাদগুলো যাকে ঘিরে রচিত হয়েছে তিনি হলেন ‘শিক্ষক’। জন্মের পর একটা শিশুর অন্তরে থাকে সাদা কাগজের মতো আর মাতা-পিতার কাছ থেকে প্রাক-পূর্ব প্রাথমিক শিা লাভ করে এ সাদা অন্তরে কিছুটা কালি পড়ে। এরপর প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে একেবারে কর্মজীবন এমনকি মৃত্যুকালীন সময়ের পূর্ব পর্যন্ত শিকদের তত্ত্বাবধানে থেকে তার অন্তরটা অভিজ্ঞতায় ভরপুর করে তুলে।
এমনি একজন শিক ছিলেন আলহাজ্ব মাওলানা মোহাম্মদ আফজাল হোসেন সরকার। যিনি হাজার হাজার ছাত্রকে কথা বলতে শিখিয়েছিলেন, পৃথিবীকে জানতে শিখিয়েছিলেন, জানতে শিখিয়েছিলেন সমাজকে, উপলব্ধি করতে শিখিয়েছিলেন ন্যায়-অন্যায় বোধ, ভালো-মন্দ, উচিৎ-অনুচিৎ প্রভৃতি। সর্বোপরি শানিত করেছিলেন জাতির মেধা আর মনকে। সমাজকে আলোকিত করার, সমাজ থেকে যাবতীয় কু-সংস্কার, কু-প্রথা, অন্ধকার দূর করে সমাজকে প্রতিষ্ঠা করার মহান দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছিলেন। শধু তাই নয়, তার হাত ঘুরে জীবন ফিরে পেয়েছিল অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু আজ তার কদর নেই। আজ যেন তিনি অচল পয়সা।
এ রকম ভাবে লিখতে হবে তা কোনদিন ভাবিনি। কিন্তু অবাক করা ঘটনা না দেখলে বিশ্বাস হবে না বাবার হাতে গড়া পীরগঞ্জ সদরে একমাত্র এলেম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পীরগঞ্জ সিনিয়র ফাযিল মাদ্রাসা বিল বোর্ডে তার নাম পর্যন্ত নেই। একটু পেছনে ফিরে যাই। রংপুরে পীরগঞ্জ সিনিয়র ফাযিল মাদারাসাটি ১৯৭৫ সালে ফোরকানিয়া মাদ্রাসা হিসেবেই ছিল। আমার পিতা ১৯৭৫ সালে এবং সুনামের সহিত প্রতিষ্ঠাকালীন সুপার হিসেবে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত চাকুরী করেছন। হয়ত এরকমই থাকত যদি না আমার বাবা ঘষে-মেঝে এটাকে আজকের অবস্থানে না আনাতেন। অথচ পীরগঞ্জের ইতিহাসে ব্যক্তি পারিবারিক ইতিহাস বেশ কয়েকজন লোকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু আমার বাবা সেখানে নেই। অথচ আমার পিতা মাওলানা: আফজাল হোসেন সরকার শিা প্রতিষ্ঠান গড়ার কারিগর। যিনি আরাজি গঙ্গারামপুর বালিকা দাখিল মাদ্রাসা, মন্ডলের বাজার দাখিল মাদ্রাসা, কুমরসই দাখিল মাদ্রাসা, শুকানচৌকি দাখিল মাদ্রাসা, সর্বশেষ ১৯৯৬ সালে পীরগঞ্জের জাম তলায় পীরগঞ্জ বালিকা দাখিল মাদ্রাসা সমাজের প্রয়োজনেই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সবচেয়ে বড় খারাপ লাগলো, আজ আমার বাবর হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানের বিল বোর্ডে আমার বাবার নাম নেই। অথচ তিনি ছিলেন এর পূরোধা।
এই কৃতজ্ঞতাবোধ টুকু যাদের নেই, তাদেরকে কি করে বোঝাই- যে দেশে জ্ঞানীর কদর নেই, সেদেশে জ্ঞানী জন্মায়না। এ ব্যাপারে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা রুহুল আমিনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আজ করবো, কাল করবো বলে দিনের পর দিন টালবাহনা করছেন। উল্লেখ্য, ওই প্রতিষ্ঠানের বেশ কয়েকটি নিয়োগের অর্থ ওই অধ্যক্ষ আত্মসাত করেছেন মর্মে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।