শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১৮ পূর্বাহ্ন
আব্দুল করিম সরকার : রোজায় পীরগঞ্জে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে বেশী দামে বিক্রি করা হচ্ছে কলা। ব্যাপারীরা কৃষকের ক্ষেত থেকে প্রায় সেই আগের দামে রোজার আগে দাম কাঁদি হিসেবে কলা কিনে আনলেও সেই কলা পাকিয়ে বাজারে হালা হিসেবে প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি করা হচ্ছে। রোজায় পাকা কলার দাম বাড়লেও চাষীদের কোন লাভ নেই। যে দামে কলা ক্ষেত থেকে কেনা হচ্ছে বাজারে তার দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। শুধু চাষীর ক্ষেত থেকে ব্যাপারীরা কিনে আড়ৎদারের কাছে বিক্রি করে এবং সেখান থেকে খুচরা বিক্রেতারা কিনে বাজারে বিক্রি করছে। চাষী থেকে তিন হাত ঘুরেই পীরগঞ্জ পৌর বাজারসহ অন্যান্য হাট বাজার গুলোতে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। কলার সর মজা লুটছে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা। যারা কৃষকের ক্ষেত থেকে কলা কিনছেন তারাই সিন্ডিকেট করে কলার মুল ব্যবসায়ীদের আড়ৎদার কাছে সংকট দেখিয়ে বেশী দাম হাঁকাচ্ছেন। মুলতঃ বেশী দাম পাওয়ার লোভেই কলার কৃত্রিম সংকট দেখানো হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিসার সুত্র জানায় চলতি মৌসুমে উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে প্রায় ৫’শ হেক্টর জমিতে কলার চাষ হয়েছে। এর মধ্যে মালভোগ কলা ২৫০ হেক্টর, মেহের সাগর কলা ২০০ হেক্টর, সবরি ৫০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। এ ছাড়া বাড়ীর আশপাশে ঘের ও পুকুর পাড়ে আরও প্রায় ৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের কলার চাষ হয়েছে। খোজ নিয়ে জানা গেছে বড় ধরণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় এবার উপজেলায় কলার বাম্পার ফলন হয়েছে। অনেক চাষী দাম বেশী পাওয়ার লক্ষ্যে ব্যাগিং পদ্ধতিতে কলার আবাদ করেছেন। এতে একদিকে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেয়ে কলায় সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় অপরদিকে কলা বড় হওয়ায় দামও বেশী পাওয়া যায়। প্রতি বিঘা জমিতে ৪০০ কলা গাছ লাগানো যায়। এতে এবার ৫০ একর জমিতে লাগানো কলা গাছের সিংহভাগ কাঁদি এসেছে। রোজায় অধিকাংশই পাকার উপযোগী হয়েছে। ৫০ একর জমিতে লাগানো ৬০ হাজার কলা গাছে কাঁদি হয়েছে। যার সিংহভাগ পাকার উপযোগী হয়েছে। পৌর শহরের কলার বড় আড়ৎদার ভুট্টু মিয়া জানান, রোজার আগে ২টি আড়ৎ থেকে গড়ে ২০-৩০ মণ কলা বিক্রি হতো। রোজার প্রথম দিকে প্রায় দ্বিগুণ হারে কলা বিক্রি হয়। কিন্তু ইদানিং কলার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং ব্যাপারীরা চাহিদামতো কলা সরবরাহ করতে না পারায় কলা বিক্রি কমে গেছে। কলা চাষী ব্যাপারী এবং খুচরা ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে এ চিত্র উঠে এসেছে। সরেজমিন উপজেলার কিশোরগাড়ী গ্রামের ওসমান গণি জানান, গত ১৫ বছর ধরে কলা চাষ করে আসছি। এ বছর মালভোগ ও মেহসাগর কলা চাষ করেছি। তবে গত বছরের তুলনায় বাজার ভালো হওয়ায় ব্যবসায়ীরা আমাদেরকে সেই দাম দিতে চায় না। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নাছিরুল আলম জানান, এবারে প্রচুর কলা আবাদ হয়েছে এবং গত বছরের তুলনায় কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছে।