শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:০৪ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: রংপুরের পীরগঞ্জে ভেন্ডাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে কোটিপতিদের খেলা হবে। তাদের মধ্যে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল ইসলাম রবি, ইউনিয়নটির আওয়ামীলীগ সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর হোসেন মন্ডল এবং সাধারণ সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম ৩ জনই মুলতঃ হেভিওয়েট চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং তারা কোটিপতি ব্যবসায়ী। তারা একই পরিবারের হলেও জনগণের মাঝে কেউ নন্দিত, আর কেউ নিন্দিত। শুক্রবার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় ওই ইউনিয়নে এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীক চেয়েছেন ১৬ জন। জানা গেছে, ভেন্ডাবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর হোসেন মন্ডলকে নিয়ে ইউনিয়নটিতে নানান রটনা, ঘটনা রয়েছে। তিনি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় তার দাপটে ইউনিয়নবাসী ভীত সন্ত্রস্থ ও অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল। ফলে ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে ইউনিয়নবাসী জোটবদ্ধ হয়ে নবীন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সমাজসেবক রবিউল ইসলাম রবি কে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন। এখনো বর্তমান চেয়ারম্যান তার কিন ইমেজ ধরে রেখেছেন। পান্তরে সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর হোসেন তার মতাকালে সাংবাদিককে নির্যাতন, নারী ও শিশু নির্যাতনসহ অসংখ্য হামলা-মামলার ঘটনা ঘটিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি ১০ টাকার চাল চুরি আত্মসাৎ মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামীও। তার হঠকারিতার কারণে পুরো ইউনিয়ন ােভে ফুঁসে উঠেছিল। তার দুর্দান্ত প্রতাপের কারণেই ইউনিয়নবাসী অসন্তুষ্ট হওয়ায় তিনি গত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী বলেন, মঞ্জুর চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় যে অত্যাচার, অনাচার করেছে। তা ভুলিনি। তাকে (মঞ্জুর) ছাড়া যে কাউকে নৌকা প্রতীক দিলে আমরা স্বস্তিতে থাকবো। ভেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ তথা ইউনিয়নটিতে রাজনৈতিক অভিভাবকত্ব করছে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবির যৌথ পরিবার। রবির পরিবারের সদস্য সাদেকুল ইসলাম বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। তিনি ইউনিয়নটির আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আর তারই আপন ভাতিজা সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর হোসেন মন্ডল আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়েছেন। চাচা আর ভাতিজা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিলেও তাদের মধ্যে দা-কুড়াল সম্পর্ক রয়েছে। তাদের মধ্যে স্বার্থের একটু ব্যাঘাত ঘটলেই তারা তাদের সমর্থকদের নিয়ে রাজপথে নেমে আসেন। অপরদিকে চেয়ারম্যান রবিউল ইসলামের সাথে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেকুল ইসলামের বোঝাপড়া বেশ ভালোই রয়েছে। আবার বর্তমান চেয়ারম্যানের সাথে সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর হোসেনের সম্পর্কও ভাল না। পরিবারটির ৩ জনই এবারে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক চেয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যানের সাথে আমার ইতিবাচক সম্পর্ক রয়েছে। পান্তরে মঞ্জুর হোসেন মন্ডলের সাথে দলীয় সম্পর্কও ততটা ভাল নয়। তিনি আরও বলেন, রবিউল ইসলাম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার পরপরই আওয়ামীলীগে যোগদান করেন এবং নেপথ্যে পৃষ্টপোষকতা ও দিক নির্দশনা দিয়ে ভেন্ডাবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগকে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক সংগঠনে দাড় করতে অসামান্য অবদান রাখেন। ইউনিয়নটিতে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ১৬ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর অনেকেই নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, সভাপতি – সম্পাদক সম্পর্কে আপন চাচা-ভাতিজা। তারা কোটিপতি ব্যবসায়ী। আমরা তাদের মধ্যে বিরোধ চাই না। সভাপতি মঞ্জুর হোসেন বলেন, চেয়ারম্যান হয়ে ইউনিয়নবাসীকে স্বস্তিতে রেখেছি। মাদক, বাল্য বিয়ে নির্মুলে চেষ্টা করেছি। তাতে হয়তো কারো ব্যাঘাত ঘটেছে। তাই তারা বিষোদগার করছে। চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান জনগনকে অতিষ্ঠ করায় মানুষ আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছে। আমাকে নৌকা প্রতীক দেয়া হলে মানুষের জন্য জীবন উৎসর্গ করবো।