শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০৫ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: রংপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরের টেন্ডার নিয়ে চাপা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে অসদুদ্দেশ্যে অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতার সমালোচনা থেকে এই ক্ষোভ দানা বাঁধছে। প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে সারাদেশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩টি আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপন প্রকল্পের আওতায় রংপুর জেলার কাজ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, রংপুর মহানগরীর বিনোদপুর মৌজার ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিপরীত পাশে জায়গা অধিগ্রহণ করেই নির্মান কাজের জন্য ২০২০ সালের জুলাই মাসে দরপত্র আহবান করা হয়। যার প্রাক্কলিত মূল্য ১৯ কোটি ১৮ ল ৬ হাজার ৮২৮ টাকা ২৯ পয়সা। যদিও ১৭ কোটি ২৬ লাখ ২৬ হাজার ১৪৫ টাকা ৪৬ পয়সা দরে কাজটি পায় ঢাকার মালিখা-সম্রাট কন্সট্রাকশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান। স্ট্যান্ডার্ড টেন্ডার ডকুমেন্টস অনুযায়ী এধরণের কাজে সরকারী, আধা-সরকারী বা স্বায়ত্ব-শাসিত প্রতিষ্ঠানে একই ধরণের কাজের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ সম্পন্ন করতে হবে। প্রায় ২০ কোটি টাকার এই কাজটি করতে নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরের পছন্দের এক ঠিকাদারকে কাজ দেয়ার জন্য নিয়মের ব্যতয় ঘটিয়ে টিকাদারের যোগ্যতা সংশোধন করে। সরকারী নির্মাণ কাজের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতাল, আলুর কোল্ড স্টোরেজ, ওয়্যার হাউজ বা বিদ্যুৎ সাপ্লাই কাজের নির্মানের অভিজ্ঞতাকেও টেন্ডার ডকুমেন্টে ঠিকাদারের যোগ্যতা হিসেবে যোগ করে দেয়। বাংলাদেশের টেন্ডার নোটিশে বেসরক্রাী কাজের অভিজ্ঞতাকে যোগ্যতা বিবেচনা করাকে প্রকৌশল কাজে অভিজ্ঞরা “সর্বপ্রথম” এবং “বিস্ময়কর ঘটনা” বলে অভিহিত করছেন। তাদের মতে, এটা উদ্দেশ্য মূলক। চাকরির নিরাপত্তার স্বার্থে পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রকৌশলী জানান, এটা সম্পূর্ণ পপাতিত্বমূলক কাজ। পছন্দের ঠিকাদার কে কাজ দেয়ার অসদুদ্দেশ্যে টেন্ডার ডকুমেন্টস পরিবর্তন করা হয়েছে। তদুপরি রংপুর এবং গাইবান্ধা জেলার ৪টি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে ৬ তলা ভবন নির্মানের টেন্ডার ডকুমেন্টস পরিবর্তন করে পছন্দমত ঠিকাদার কে কাজ দেয়ার বিষয়ে সমালোচনা চলছে এই নির্বাহী প্রকৌশল দপ্তরের বিরুদ্ধে। যদিও এ সম্পর্কে নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেছেন, যারা কাজটা পেয়েছেন তারা খুবই যোগ্যতাসম্পন্ন। ঢাকার ও পাবনার ঠিকাদার যৌথভাবে কাজটি করছেন। ইজিপি টেন্ডার অনুযায়ী তারা ১০% লেসে কাজটা করছেন। তাদের সাথে আমার কোন পরিচয় নাই। আমার পরিচয় তো থাকার কথা রংপুরের ঠিকাদারের সাথে। ঢাকা থেকেই তাদের কাজ দেয়া হয়েছে। এখানে আমার কোন স্বার্থ নাই। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ১। টেন্ডার আই ডি নং ৩৫৪০৯৬ আমিনা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা ২। টেন্ডার আই ডি নং ৩৫৪০৯৭, সুন্দরগঞ্জ আব্দুল মজিদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা ৩। টেন্ডার আই ডি নং ৩৫৭২০০ পীরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, পীরগঞ্জ, রংপুর ৪। টেন্ডার আই ডি নং ৩৪৯৩৩৪ রংপুর মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট-এর প্রতিটি ভবনের জন্য প্রাক্কলিত মুল্য প্রায় ৬ থেকে ৮.৫০ কোটি টাকা। পিপি আর অনুযায়ী এর টেন্ডার ডকুমেন্টসে লিকুইড এসেট চাওয়ার কথা প্রায় ৩ কোটি টাকা। কিন্তু অদৃশ্য কারণে মাত্র ২২৫ টাকা লিকুইড এসেট চাওয়া হয় টেন্ডার ডকুমেন্টসে। যা বিশেষ কাউকে সহায়তা দেয়ার জন্য করা হয়েছে বলে অনেকেই দাবী করছেন। এ ব্যাপারে শিা প্রকৌশল অধিদপ্তর রংপুর জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ইজিপি সিস্টেম অনুযায়ী আমরা প্রয়াক্কলিত মূল্য থেকে ৫০% থেকে ৮০% লেস দিয়ে লিকুইড এ্যাসেট ধরি। আমরা ২২৫ টাকা নয়, ২ কোটি ২৫ ল টাকা ধরেছি।