শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৪৭ অপরাহ্ন
এ টি এম আশরাফুল ইসলাম সরকার রাংগা
রসিক নানার সুখ যে ভারী বয়স হলেও আশি,
ছেলে-মেয়ের রোজগারেতে গাও দিয়েছে ভাসি।
গাঁয়ের মাথা রসিক নানা ছেলে-মেয়ের দামে,
এক কথাতেই গাঁয়ের সবাই চলে নানার নামে।
বর্তমানে নানার ভালো যাচ্ছেনা দিন কাল,
লক-ডাউনে বন্দি ঘরে শুনছে নানীর ঝাল।
কারণ ছাড়াই ঝগড়া-ঝাটি চলছে দিনে-রাতে,
বলল কথা তাই তো নানা সন্তানাদির সাথে।
বড় ছেলে ডাক্তারীতে এমবিবিএস পাশ,
হাসপাতালের চাকরী নিয়ে ঢাকায় করেন বাস।
ডাকলে নানা সেই ছেলেকে, বলল ছেলে-“বাবা,
সারাদেশেই চলছে এখন মারণ-ব্যাধির থাবা।
আমরা যদি হাল ছেড়ে দেই বাঁচবে কি আর দেশ!
জীবন দিয়ে করবো মোরা এই করোনা শেষ।
হাজার রোগীর করুণ নয়ন কেমন করে ছাড়ি,
প্লিজ বাবা, যাচ্ছিনা আর এই সময়ে আর বাড়ি।”
মনটা খারাপ বেজায় নানার উপায় কি আর আছে,
ফোন লাগালো এবার ওনার পুলিশ ছেলের কাছে।
কেমন আছিস? আয়না বাবা দিন কাটেনা আর”-
আঁতকে উঠে বলল ছেলে-“একটুও নেই ছাড়।
দেশের এমন দু:সময়ে লক্ষ মানুষ ছাড়ি,
কেমন করে ফিরব বাবা এই সময়ে বাড়ি।”
মনের খেদে ফোনের চাবি টিপলো নানা ফের,
নার্স পড়ানো মেয়ের সাথে চলল কথার জের।
বৃথাই হলো সকল কথা- মেয়ের কথার তোড়ে,
সবাই বলে একই বুলি নানার মাথা ঘোরে।
একটা ছেলেই বাকী আছে রাখবে কি তার কথা!
এটা-সেটা ভেবে নানা ফোন লাগালো তথা।
উপজেলার নির্বাহী সে রিসিভ করে ফোন,
বলল- “বাবা, এই এলাকা হচ্ছে বিপদ জোন।
গরীব, দু:খী, সর্বহারা মানুষ যে সব আছে,
অনুদানের সবটা নিতুই বিলাই তাদের কাছে।
বলো বাবা কোন হৃদয়ে আমি এদের ছাড়ি,
কেমন করে এই সময়ে ফিরব দেশের বাড়ি।”
সবার কাছেই বলল কথা লাভ হলোনা তার,
নিজের ছেলে, নিজের মেয়ের এতই অংকার!
হাজার টাকা খরচা করে বিদ্যা নিল যারা,
এমন ডাকেও আজকে কেহই দিচ্ছেনা আর সাড়া?
এক কলেতেই আসত সবাই শুনতে আমার বাণী,
দু:খে নানার নয়ন বেয়ে ঝড়ছে শুধুই পানি।