মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:২১ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: রংপুরের পীরগঞ্জে করোনাকালে খামারীদের প্রনোদনার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এক গ্রাম্য পশু চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কয়েকজন খামারীর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করায় মাহবুব মিয়া নামের এক খামারীকে উপজেলা সদরের একটি বাসায় আটকে রেখে নির্যাতন করে ৩’শ টাকার নন-জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে স্বার নেয়ার মামলা হলে পুলিশ ওই পশু চিকিৎসককে গ্রেফতার করে। শনিবার উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের মেহেদুল ইসলামের ছেলে পশু চিকিৎসক মতলুবর রহমান (২৯) কে গ্রেফতার করে। উপজেলা প্রানী সম্পদ দফতর সুত্রে জানা গেছে, করোনাকালে দেশের খামারীদেরকে তি পুষিয়ে দিতে সরকার লাইভষ্টক এন্ড ডেইরি ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট (এলডিডিপি) এর আওতায় প্রনোদনা হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নগদ একাউন্ট নম্বরে টাকা প্রদান করে। এরমধ্যে গাভী ও লেয়ার মুরগী, ব্রয়লার মুরগী এবং সোনালী মুরগীর খামারীদেরকে ওই প্রনোদনা দেয়া হয়। উপজেলায় ১ম পর্যায়ে ১ হাজার ৫’শ ১৬জন এবং ২য় পর্যায়ে ৫’শ ৯২জনকে প্রনোদনা দেয়া হয়। এতে প্রায় ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। রংপুরের পীরগঞ্জের ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মাঠপর্যায়ে খামারীদেও তালিকা প্রস্তুত করতে প্রানী সম্পদ বিভাগের মাঠকর্মী হিসেবে নিয়োজিত এলএসপি’র সদস্যরা (লাইভষ্টক সার্ভিস প্রোভাইডার) নাম তালিকা করে। ওই এলএসপির সদস্যরা কৌশলে প্রকৃত খামারীসহ ভুয়া খামারীর নাম তালিকা করতেই ঘাপলার আশ্রয় নেয়। পাশাপাশি তারা খামারীদের কাছ থেকে জাতীয় পরিচয় পত্র নিয়ে মোবাইলের নগদ একাউন্ট খোলার কথা বলে নতুন সীম কার্ড কিনে এলএসপির অধিকাংশ সদস্য সীমগুলো নিজেদেও কাছে রেখে দেয়। একপর্যায়ে ওইসব সীমে নগদ একাউন্টে আসা টাকা এলএসপির সদস্যরা তুলে আত্মসাত করে। এছাড়াও উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তাসহ অফিসের একাধিক কর্মকর্তা কর্মচারীও প্রনোদনার টাকা নয়ছয়ে জড়িত বলে খামারীরা অভিযোগ করেছেন। তালিকা অনুযায়ী তদন্ত করা হলে প্রায় কোটি টাকা নয়ছয়ের ঘটনা বেরিয়ে আসবে বলে খামারীদেও সুত্রে জানা গেছে। উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নের বেতকাপা গ্রামের মাহবুব মিয়া নামের এক খামারীর মোবাইল সীম ব্যবহার করে একই ইউনিয়নের পশু চিকিৎসক মতলুবর রহমান প্রনোদনার টাকা আত্মসাত করে। এ ছাড়াও ওই পশু চিকিৎসক আরও কয়েকজনের টাকা আত্মসাত করায় খামারী মাহবুব মিয়া ওই ঘটনার প্রতিবাদ করেন। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে ওই পশু চিকিৎসক গত ২২ সেপ্টেম্বও দুপুরে তাকে (মাহবুব মিয়া) উপজেলার চন্ডীপুর গ্রামের মাহবুবার রহমান আলমের উপজেলা সদরের বাসায় ডেকে আনে। পওে ওই বাসায় প্রনোদনার টাকা নিয়ে যেন কোন অভিযোগ না করা হয় সে জন্য মাহবুব মিয়াকে শাসানোর পরে ৩’শ টাকার ননজুডিশিয়াল ফাঁকা ষ্ট্যাম্পে স্বার করে নেয়া হয়। ওই ঘটনায় খামারী মাহবুব বাদী হয়ে গতকাল শনিবার পীরগঞ্জ থানায় ২ জন সহ আরো অনেকের নামে মামলা করেছেন। ওই ঘটনায় পুলিশ মামলার ১নং আসামী পশু চিকিৎসক মতলুবরকে গ্রেফতার করেছে। থানার ওসি সরেস চন্দ্র বলেন, মামলার পর প্রধান আসামীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামীদেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ তাজুল ইসলাম উপজেলা প্রানী সম্পদ সম্প্রসারন কর্মকর্তা ডাঃ রোকন মিয়ার উপর দোষ চাপিয়ে বলেন, মাঠপর্যায়ে এলএসপি কর্মীরা যে তালিকা দিয়েছে। সে অনুযায়ী প্রনোদনার টাকা এসেছে। এ ব্যাপারে আমি জড়িত নই।